বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১১:০৮ অপরাহ্ন

ইরানকে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে: মার্কিন বিশেষ দূত

ইরানকে পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে: মার্কিন বিশেষ দূত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, একুশের কণ্ঠ:: যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে তেহরানকে অবশ্যই তাদের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ এবং বাতিল করতে হবে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) তিনি এ মন্তব্য করেন। এর মাধ্যমে ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরেক দফা আলোচনা শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের চাহিদার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।

এর আগের দিন জ্বালানি উৎপাদনের জন্য সীমিত পরিসরে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকে যুক্তরাষ্ট্র মেনে নেবে বললেও উইটকফের বক্তব্য সে অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে উইটকফ বলেন, যেকোনো চূড়ান্ত সমঝোতার মাধ্যমে এমন একটি কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে- এর অর্থ হচ্ছে, ইরানকে অবশ্যই তার পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ও অস্ত্রায়ন কর্মসূচি বন্ধ করে তা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করতে হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক এই দূত আরো বলেন, বিশ্বের স্বার্থেই আমাদের একটি কঠোর, তবে ন্যায্য ও স্থায়ী চুক্তি তৈরি করা জরুরি। আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে ঠিক সেই কাজটিই করতে বলেছেন। উইটকফের আনুষ্ঠানিক পদবি ‘মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত’ হলেও ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে এই অঞ্চলের বাইরেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে আলোচনার নেতৃত্ব দেওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ এই দূত গত শনিবার ওমানে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিলেন এবং ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক দফা আলোচনা করেন। পরবর্তী দফার আলোচনার দিন নির্ধারিত হয়েছে ১৯ এপ্রিল।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র চায়, ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ‘বাতিল’ করুক। এর পাশাপাশি হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিক আল সাঈদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আলোচনার মাধ্যমে শেষ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

এর আগে সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উইটকফ বলেন, ইরান ৯০ শতাংশে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করলে, তা পারমাণবিক অস্ত্রের তৈরির জন্য ব্যবহার করতে পারে। তাদের ৩.৬৭ শতাংশের বেশি সমৃদ্ধ করার প্রয়োজন নেই। তবে, উইটকফ মঙ্গলবারের বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সমস্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ দেখতে চায়।

তেহরান এবং ওয়াশিংটন কয়েক দশক ধরে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা এবং উত্তেজনার মধ্য দিয়ে গেছে। মার্কিন প্রশাসন বারবারই বলে আসছে, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা তাদের শীর্ষ বিদেশ নীতির অগ্রাধিকার।

যদিও ইরানি কর্মকর্তারা কয়েক দশক ধরে বলে আসছেন যে, দেশটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে চাইছে না। তবে তাদের দেশের পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার এবং তৈরি করার অধিকার রয়েছে। গত মাস থেকে এ নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়েছে।

সোমবার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। আলোচনা সফল না হলে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে ‘কঠোর’ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

এদিকে মঙ্গলবার, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, “আলোচনাগুলো ফলাফল দিতে পারে বা নাও পারে। আমরা এটি নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী বা খুব বেশি হতাশাবাদী নই। অবশ্যই, আমরা অন্য পক্ষের প্রতি খুব সন্দেহবাদী, তবে আমাদের নিজস্ব ক্ষমতার ওপর আত্মবিশ্বাসী।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com